শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী
২০১৭ সালের ১৪ আগস্ট ছিল শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী। প্রতিবছর ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী (জন্মাষ্টমী) তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মোৎসব পালন করা হয়। জন্মাষ্টমীকে কৃষ্ণাষ্টমী, শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী প্রভৃতি নামেও ডাকা হয়।
গরুড় পুরাণ অনুসারে, বিষ্ণুর ৮ম অবতার শ্রীকৃষ্ণের ৫২৪৩ তম জন্মতিথিতে শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য:-
০১. শাস্ত্রীয় বিবরণ অনুযায়ী, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দ্বাপর যুগে ৩২২৮ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ১৮ অথবা ২১ আগষ্ট বুধবার ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টম তিথিতে যাদব(যদু) বংশে জন্মগ্রহন করেন।
০২. কৃষ্ণ যাদব-রাজধানী মথুরার রাজপরিবারের সন্তান। তিনি বসুদেব ও দেবকীর অষ্টম পুত্র। তাঁর জন্ম হয়েছিল মথুরায়(কংসের কারাগারে) তবে তিনি বেড়ে ওঠেন গোকুলে। তিনি ছিলেন বৃন্দাবনের গোপালক সম্প্রদায়ের প্রধান।
০৩. কৃষ্ণ শব্দটির সংস্কৃত অর্থ হলো কালো, ঘন বা ঘন-নীল। কৃষ্ণের মূর্তিগুলিতে তাঁর গায়ের রং সাধারণত কালো এবং ছবিগুলিতে নীল দেখানো হয়ে থাকে।
০৪. কৃষ্ণ মাত্র ৬ মাস বয়সে ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পুতনা রাক্ষসীকে হত্যা করেন এবং যৌবনে কংসকে বধ করেছিলেন। বহুবার তিনি বৃন্দাবনবাসীর জীবনরক্ষা করেছিলেন।
০৫. শ্রীকৃষ্ণের মোট ১০৮টি নাম রয়েছে। নন্দের নন্দন, যাদু বাছাধন, সুন্দর গোপাল, ঠাকুর রাখাল, ঠাকুর কানাই, রাজা ভাই, দেব চক্রপাণী, শ্রীমধুসূদন, সত্যের সারথি, নীলকান্তমণি, শিবানী, ত্রিলোকের পতি, পূর্ণ অভিলাস, মদনমোহন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
০৬. কৃষ্ণের ১৬১০৮ জন স্ত্রী ছিলেন। যাদের মধ্যে বৈবাহিকসূত্রে প্রধান স্ত্রী ছিলেন আটজন(রুক্মিণী, সত্যভামা, জাম্ববতী, কালিন্দি, মিত্রবৃন্দা, নগ্নাজিতি, ভদ্রা ও লক্ষণা) এবং বাকি ১৬১০০ জন ছিলেন নরকাসুরের অন্তঃপুর থেকে উদ্ধার হওয়া ধর্মাবতার কৃষ্ণে সমর্পিত ও তাঁর অধিকারপ্রাপ্ত নারী।
০৭. কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময় কৃষ্ণ অস্ত্র ধারণ না করে পাণ্ডবদের পক্ষে অর্জুনের রথের সারথির ভূমিকা পালন করেন।কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে তিনি অর্জুনকে অনেক উপদেশ দেন, তার মুখনিঃসৃত উপদেশগুলি শ্রীমদ্ভাগবত গীতা নামে পরিচিত।
০৮. কৃষ্ণের জন্মস্থান মথুরায় বর্তমানে কমপক্ষে ৪০০টি মন্দির রয়েছে যেখানে তাঁর আরাধনা করা হয়।
০৯. শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান, পরম সত্ত্বা। তাই কৃষ্ণকে কোন প্রকার রোগ ব্যাধী স্পর্শ করতে পারত না এবং তিনি কখনোই ক্ষুধার্ত বা তৃষ্ণার্ত হতেন না।
১০. কৃষ্ণ অর্জুনের পুত্র পরীক্ষিতের প্রাণরক্ষা করেন, যাকে অশ্বত্থামা মাতৃগর্ভেই ব্রহ্মাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিলেন। পরবর্তীকালে পরীক্ষিতই পাণ্ডবদের উত্তরাধিকারী হন।
No comments